জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেছেন, সমাজ পরিবর্তনের একটা বড় হাতিয়ার হলো নাটক।

নাটকে নানান রকমের চরিত্র নানানভাবে মানুষকে আন্দোলিত করে থাকে। সংস্কৃতি চর্চায় আমাদের নারীরা দেশবিভাজনের সময় থেকেই অগ্রগামী ছিলো সেটা কি হিন্দু, কি মুসলমান! পূর্বে সংস্কৃতি চর্চার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল পুরান ঢাকা, যা এখন বিলুপ্তপ্রায়। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পুরান ঢাকার সবাইকে সম্পৃক্ত করে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মূল ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ‘কী ধ্বনি বাজে, গহনচেতনা মাঝে’ স্লোগানকে সামনে রেখে রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দ্বিতীয় নাট্যোৎসব এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন পথনাটকের মধ্য দিয়ে সমাজে জনসচেতনতা তৈরি করা যেতে পারে। প্রগতিশীল সমাজ, ধর্মান্ধতা নয়, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র, গণতান্ত্রিকতার চর্চা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, বাক স্বাধীনতা এইগুলোর জন্য নাট্যকলার গুরুত্ব অপরিসীম।”

এসময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর, এমপি। নাট্যভাষণে তিনি বলেন, “বিভিন্ন বিষয়ে তত্ত্ব, ইতিহাস পড়ানো হয়ে থাকে কিন্তু নাট্যকলায় অভিনয়শিল্পীকে মূলত শিখতে হয় কিভাবে দর্শকের সাথে যোগাযোগ সৃষ্টি করতে পারি আর অভিনয়টা দর্শকরা কতটা হৃদয়ে ধারণ করেছেন তার মধ্য দিয়ে। আমি মূলত নানা মানুষের নানান বিচিত্র জিনিষ দেখে শিখি তবে বর্তমানে যারা একাডেমিকভাবে শিক্ষা গ্রহণ করছে তারা ভাগ্যবান, দুটোই শিখছে। যেমনিভাবে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে অনেক বই পড়লে জ্ঞানী হওয়া যায় তেমনিভাবে এই শিক্ষার্থীরা মানুষকে যত বেশি দেখবে জানবে তত বেশি শিখবে।”

তিনি আরো বলেন,“খেয়াল রাখতে হবে আমাদের নাটকগুলো যেন সবসময় বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে হয় এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বাঙালির যে গৌরবোজ্জল সম্মান জাতির পিতার নেতৃত্বে যে স্বাধীনতা এগুলো যাতে ধারণ করতে পারি।”

এছাড়াও নাট্যকলা বিভাগ. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ক্যাথরিন পিউরীফিকেশনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ুন কবীর চৌধুরী এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তিনদিন ব্যাপী (২৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি) নাট্যোৎসবে প্রতিদিন ২টি করে (দুপুর ১২ ঘটিকায় ও সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায়) নাটক প্রদর্শনী হবে।